সরকার রিজার্ভ থেকে একটি পয়সাও নষ্ট করে না: প্রধানমন্ত্রী

0

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি নেতাদের অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কখনো রিজার্ভ থেকে এক পয়সাও অপচয় করে না, বরং এই অর্থ দেশ ও জনগণের স্বার্থে ব্যবহার করে। শনিবার সকালে ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৪ কিলোমিটার ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে সাভারের আশুলিয়া বাজার সংলগ্ন কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কার্যত উপস্থিত থেকে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা সব সময় রিজার্ভের টাকা খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা থেকে কোনো অর্থের অপব্যবহার হয় না। বিএনপি নেতারা সবসময় এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন, কারণ তাদের নেতা তারেক রহমানকে মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছিল এবং এখন তিনি পলাতক। আমি তাদের বলতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এটি প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। সেখান থেকে আমরা এই রিজার্ভকে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ, যাতায়াত, আমদানি সবকিছুই প্রায় বন্ধ। এবং যখনই যোগাযোগ চালু হয়, আমাদের আমদানির উদ্বৃত্ত সরবরাহ এবং রিজার্ভ থেকে অর্থ প্রদান করতে হয়, সেইসাথে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার জন্য ব্যয় করতে হয়। তারপরও বাংলাদেশের মতো বিনামূল্যের ভ্যাকসিন ও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা দেওয়া হচ্ছে, যা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ করতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যপণ্যের দাম, পরিবহন খরচ, জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টাসহ আমদানি করতে হয় এমন সব পণ্যের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ চাল উৎপাদন করলেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিছু আমদানি করতে হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যা ব্যয় করেছি তা জনগণের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে। জনগণের জন্য খাদ্য ও ওষুধ ক্রয় করতে হবে মানুষের কল্যাণে। সার, জ্বালানি, বিদ্যুৎ আমাদের কিনতে হয়, আমরা নগদ টাকা দিয়ে কিনি। তাছাড়া আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে বিমানটি কিনেছি। আমরা যেমন নিজস্ব অর্থায়নে নদী ড্রেজিং করছি, তেমনি কিছু বিনিয়োগও করছি।

তিনি বলেন, তার সরকার এই টাকা অন্য দেশের ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে নিলে সুদসহ পরিশোধ করতে হতো। আর সোনালী ব্যাংক থেকে আমরা যা দিচ্ছি তা আমাদের ব্যাংক থেকে দিলে সুদসহ দেশের টাকাই থেকে যায় এবং সে কথা মাথায় রেখেই আমরা ব্যয় করছি প্রায় ৮ বিলিয়ন টাকা। এর থেকে কিছু ডলার শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুর্দশার জন্য ঋণ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, তাই এখানে কেউ টাকা নেয়নি, যা তাদের মনে সবসময় ভয় থাকে, এমনটাই তারা বলেন। তাই যাদের অর্থ পাচারের অভ্যাস আছে তারাই জানে যে অর্থ সম্ভবত হাতিয়ে নেওয়া হবে, তিনি বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বক্তব্য রাখেন। সেতু বিভাগের সচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ইংপ্রেসওয়ে সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, আজ একযোগে একশ সেতু উদ্বোধন করলাম। পদ্মা সেতু ও যমুনার ওপর সেতু নির্মাণসহ সারা বাংলাদেশে আমরা যে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি তার ফল দেশের মানুষ পাচ্ছে। তাই কেউ আমাদের রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে, গিলে বা কেড়ে নেয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *