সড়কে চাঁদাবাজি নিয়ে মেয়র তাপসের সঙ্গে বচসা করেন শ্রমিক নেতারা

0

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের উত্তপ্ত কথাবার্তা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদের ২৯তম সভায় এ ঘটনা ঘটে।

বৈঠক সূত্র জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, পুলিশের মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মেয়রের সামনে বাকবিতণ্ডা হয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. সম্পাদক ওসমান আলী।

সড়কে পুলিশ চাঁদাবাজি করছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন পরিবহন নেতারা। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা পার্কিংয়ের নামে রাস্তার ইজারা আদায় করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের সঙ্গে একাধিক বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে ওসমান আলী বলেন, গাড়ি থামিয়ে সিটি করপোরেশনের নামে চাঁদা আদায় করা হয়েছে।

তখন ফজলে নূর তাপস বলেন, মালিক-শ্রমিকের সিন্ডিকেট চাঁদাবাজ। বাধা তখনই আসে যখন রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। মালিক-শ্রমিক নেতাদের চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ বক্তব্যের প্রতিবাদে ওসমান আলী মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার লোকজন ঘুষ খায়। শ্রমিকরা লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। টার্মিনাল ছাড়া ফি বাড়ানো হবে না জানিয়ে স্থানীয় সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু আপনি ঢাকা শহরের ৬৫টি রাস্তা ইজারা নিয়েছেন। আপনি কিভাবে ইজারা দিয়েছেন?’

মেয়র বলেন, টার্মিনালের টাকা সিটি করপোরেশন পায় না। জবাবে ওসমান আলী বলেন, ‘কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সারাজীবন টাকা সংগ্রহ করেছেন। এই টাকা কর্পোরেশনে জমা না দেওয়ার জন্য কি আমরা দায়ী? ফুলবাড়িয়া টার্মিনালে শ্রমিকদের জন্য প্রস্রাব ও টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। আপনি (মেয়র) ইজারা নিয়ে বসে আছেন।’

মেয়রের বক্তব্য শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ১৯৮৪ সালে চুক্তি হয়েছিল। নিমাতলী বস্তি উচ্ছেদ করে ১০ তলা পার্কিং ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন করেনি।

মেয়রকে উদ্দেশ্য করে শাজাহান খান আরও বলেন, ‘পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের আগে বৈঠক করে রেট নির্ধারণ করুন। টার্মিনাল তৈরি করুন।’

বিরোধের বিষয়ে ওসমান আলী বলেন, টার্মিনাল ছাড়া আর কোথাও কোনো ফি আদায় করা চলবে না। টার্মিনালের বাইরে ফি আদায় করলে মামলা করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু মেয়র সব রাস্তাই ইজারা দেন। ভাড়াটিয়া লোকজন চাঁদাবাজি করে। আমি এই কথাগুলো বলেছি। এ বিষয়ে মেয়রের বক্তব্য জানতে পারেনি ।

২০২০ সালের জুন মাসে, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ চাঁদা লাগাতে সমস্ত পরিবহন সংস্থার সাবস্ক্রিপশনের হার নির্ধারণ করেছিলেন। ওই হার অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় মালিক সমিতি সংগঠনের ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্যিক যানবাহন থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা আদায় করতে পারবে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোও ৫০ টাকার বেশি নিতে পারবে না। কিন্তু সড়কে টোলের নামে ইজারাদারদের চাঁদাবাজি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *