ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না: প্রধানমন্ত্রী

0

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। তার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। দৃঢ় কণ্ঠে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী। অনেকে বলেছিল, শ্রীলঙ্কা হবে, এই হবে, ওটা হবে- তাদের মুখ ছাইয়ে ভরে গেল। এটা হয়নি, ইনশাআল্লাহ হবে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, এই বাঙালিকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। আমি এটাও বিশ্বাস করি যে কেউ দাবা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা (বিএনপি-জামায়াত) যাই বলুক না কেন, এতে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলব।

শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই আমাদের পরনির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। সবাইকে আহ্বান জানিয়ে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি  না থাকে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কারো গীবত গাইতে আসিনি। কিন্তু এইট পাশ করে  আর ম্যাট্রিক ফেল করে সে দেশের উন্নয়ন হয় না। দেশপ্রেম থাকলে, দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্যবোধ থাকলে তা করা যায়। আমরা তা প্রমাণ করেছি। দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

যুবলীগের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নেতাকর্মীকে দেশ ও জনগণের সেবা করতে হবে। আপনারা গ্রামে যান, আপনারা জমি চাষ করুন। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে কোন জমি অনাবাদি থাকবে না যাতে অন্যের জমিতেও উৎপাদন করা যায়। যে কোন ফসল, সবজি এবং গাছপালা রোপণ করা উচিত। সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগের প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত শুক্রবারের এই যুব গণসমাবেশ পরিণত হয় তারুণ্যের সাগরে। দেশ-বিদেশের লাখ লাখ যুবলীগ নেতাকর্মী রঙিন টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে সেখানে জড়ো হন। আগের দিন গভীর রাত থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা বাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক ও পিকআপে করে ঢাকায় আসতে শুরু করেন। সকাল থেকেই বিভিন্ন যানবাহনসহ ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসেন। তাদের মুহুর্মুহু স্লোগান, লাঠি খেলা এবং ব্যান্ড পার্টি ও ভুভুজেলাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো বাগান। দুপুরের আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ সড়ক ও আশপাশের এলাকা জনজীবনে পরিণত হয়।

মহাসমাবেশ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সাজানো হয়েছে রঙিন বেলুন, ব্যানার ও ফেস্টুনে। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির প্রতিকৃতি ছিল। বাগানের লেকের পূর্ব প্রান্তে একটি বিশাল মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। র‌্যালি মাঠসহ মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলো জাতীয় পতাকা ও যুবলীগের পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে থাকা যুবলীগের ক্ষমতাচ্যুত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এবং টুপি-গেঞ্জি পরা সম্রাটের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে শোডাউনও ছিল চোখে পড়ার মতো।

দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে যুবলীগের বছরব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকেই আমাদের অনেক সমালোচনা করছেন। তারা দেশের উন্নয়ন দেখে না। এই যে এত উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আর মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, এগুলো কে করেছে? চোখ থাকতে অন্ধ হলে, উন্নয়ন না দেখলে কিছু করার নেই।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের নেতা কে? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে দুর্নীতি মামলার আসামি খালেদা জিয়া। তার স্থলাভিষিক্ত তারেক জিয়া আরেক ধাপ উপরে। তারেক জিয়া অর্থ পাচার মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়ও আসামি সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতার বিরুদ্ধে খুন, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির মামলার আসামি তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা মানায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *