ভুল চিকিৎসার অভিযোগ।সন্তানের পর মা আঁখিও মারা যান।ডা.সাহারকে গ্রেপ্তারের দাবি

0

ভুল চিকিৎসায় নবজাতক সন্তান মারা যাওয়ার সাতদিন পর মা মাহবুবা রহমান আঁখি মারা যান। রোববার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি মারা যান। ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন জানান, প্রসবের সময় রাজধানীর কেন্দ্রীয় হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতারণা ও অবহেলায় মাহবুবা রহমানের নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। মাহবুবুবার অবস্থাও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এরপর আঁখিকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসায় অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু ও মায়ের জীবন বিপন্ন করার ঘটনায় ইতিমধ্যেই হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে মূল আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।

ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানায়, কুমিল্লার তিতাস উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা আঁখিকে (২৫) গত ৯ জুন রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে ডা. সংযুক্তি সাহার অধীনে ভর্তি হলেও সে সময় তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। এ বিষয়ে রোগী বা স্বজনদের কিছু জানানো হয়নি। অন্য চিকিৎসকরা তাকে স্বাভাবিকভাবে ডেলিভারি করতে ব্যর্থ হন। পরে অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ১১ জুন নবজাতকের মৃত্যু হয়। আঁখির অবস্থাও সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আঁখির মৃত্যুর পর রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ল্যাবএইড হাসপাতাল। আঁখির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মেডিকেল সেন্টারের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-ই-খোদা দীপের কাছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা না দিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণে আঁখির মৃত্যু হয়েছে। এটা স্বাভাবিকভাবেই ঘটতে পারে। আঁখির শরীরের কোন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারেননি।

ভর্তির সময় রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে দীপ বলেন, রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে অজ্ঞান অবস্থায় ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে এসে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এর আগে প্রসবকালীন জটিলতায় শিশুটির মৃত্যু হয় এবং মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে আনা হয়। তিনি জানান, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রোগীকে লাইফ সাপোর্ট চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আঁখির মৃত্যুতে ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত তার সহপাঠীরা আকষ্টি সাহারকে গ্রেফতারের দাবি জানান। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের দাবি জানান তারা।

আঁখির মৃত্যুর পর সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চিকিৎসকদের রোগীর সংখ্যা বাড়াতে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস বা পোস্ট দিয়ে রোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি টিম কেন্দ্রীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই হাসপাতালের আইসিইউ বা সার্জারি রুম মানসম্মত না হওয়ায় তারা সব অস্ত্রোপচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকবে। এছাড়াও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *