কক্সবাজার-কুয়াকাটায় লাখো পর্যটক।খালি নেই হোটেল মোটেল সবখানেই গলাকাটা দাম

0

দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটির সাথে বড়দিনের ছুটি। তিন দিনের ছুটিতে সাগর দেখতে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় ছুটে এসেছে লাখো পর্যটক। রোববার পর্যন্ত কক্সবাজারে কোনো হোটেল-মোটেল পাওয়া যাচ্ছে না। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা।

অন্যদিকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা। তবে হোটেলে আবাসন ও খাবারের অতিরিক্ত দামের কারণে অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন।

গতকাল সকাল ৮টায় কক্সবাজারের কলাতলীর ডলফিন মোড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। চার লেনের চওড়া সড়ক দিয়ে দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। একে একে বাসের সারি এগিয়ে যেতে দেখা যায়। এসব বাস থেকে মানুষ ব্যাগ নিয়ে নামছে। সবার লক্ষ্য সমুদ্র দেখা।

তবে আগে থেকে হোটেলের রুম বুকিং না করে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। কথা হয় ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে ছয় সদস্যের একটি পরিবারের সঙ্গে। সকাল ৮টায় কক্সবাজার শহরে পৌঁছালেও দুপুর ১টা পর্যন্ত হোটেলে রুম পাননি তারা।

ব্যাংকার আরিফ হোসেন তার পরিবারকে কক্সবাজারে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং রবিবার বড়দিন। বাচ্চাদের পরীক্ষাও শেষ। টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে এসে দুই সন্তান, স্ত্রী ও বাবা-মাকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। কলাতলীতে শতাধিক হোটেল ঘুরেও রুম পাননি।

শুধু আরিফ হোসেনই নন, শুক্রবার সকাল থেকে হোটেলে ছুটছেন আরও অনেকে; কিন্তু ঘর নেই। কোথাও বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার পর্যন্ত তিন দিন নগরীর হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস-রিসোর্টের কোনো রুম খালি নেই বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিকরা। সোমবার ও মঙ্গলবার ১০ শতাংশ রুম খালি থাকলেও এরপর ৩১শে ডিসেম্বর (৩১ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত শতভাগ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমাবে অন্তত ৭ লাখ পর্যটক।

হোটেল বে-মেরিনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, তার প্রতিষ্ঠানের সব কক্ষ আগাম বুকিং দেওয়া আছে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার পরামর্শ হলো আগে থেকে যোগাযোগ করে হোটেলের রুম বুক করা।

কক্সবাজারে হোটেল কক্ষ রয়েছে ৮৪ হাজারের বেশি। ধারণক্ষমতা ১ লাখ ২৮ হাজার। কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে এবং ১৬ ডিসেম্বরের পর রুম ভাড়ায় কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ৯৮ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং করা আছে।

এদিকে পটুয়াখালীর ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখে মুগ্ধ পর্যটকরা। কিন্তু বাসস্থান ও খাবার হোটেল মালিকদের কারণে সব আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। পর্যটকদের বাড়তি চাপ দেখে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

কুয়াকাটার লেম্বু চর, গঙ্গামতির চর, ফাতরার বন, কাংড়ার চর ও রাখাইন পল্লী, রাখাইন বাজারসহ কিছু আকর্ষণীয় স্থান ঘুরে বেড়ান পর্যটকরা। কেউ কেউ উপভোগ করছেন নীল সমুদ্র আর প্রকৃতির অপূর্ব দৃশ্য।

খুলনা থেকে আসা পর্যটক তপন সাহা জানান, তার স্ত্রীসহ তিন বন্ধু এসেছেন। পরিবেশটা ভালো। যাইহোক, খাদ্য এবং জীবনযাত্রার অনেক খরচ। ঢাকার ডেমরা থেকে আসা পর্যটক রফিকুল ইসলাম বলেন, হোটেলগুলোতে আবাসন ও খাবারের জন্য বাড়তি দাম নেওয়া হলেও প্রশাসনের তোয়াক্কা হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ বলেন, হোটেল-মোটেলের কক্ষ খালি নেই। সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা সমস্ত হোটেল এবং মোটেলের কাউন্টারে প্রদর্শিত হয়। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *