যুদ্ধের কারণে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি ৬০ শতাংশ কমে গেছে

0

যুদ্ধের কারণে রাশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। সেই আশঙ্কা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এক বছরের আগের তুলনায় মার্চে রপ্তানি কমেছে ৬০ শতাংশ। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ডলারের রপ্তানি দুই কোটিতে নেমে এসেছে। তবে কিছু পণ্য তৃতীয় দেশ হয়ে রাশিয়ায় যাচ্ছে। এদিকে, অনেক ক্ষেত্রে রাশিয়ায় রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য ফেরতযোগ্য নয়। রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর তৈরি পণ্য নিয়েও ঝুঁকিতে রয়েছেন উদ্যোক্তারা।

উদ্যোক্তারা রাশিয়াকে পোশাক রপ্তানির জন্য সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল নতুন বা অপ্রচলিত বাজার হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। কারণ বাংলাদেশের পোশাক রাশিয়ার মাধ্যমে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হওয়া দেশগুলোর জোট কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস (সিআইএস) এর ১১টি দেশে যেতে পারে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় প্রায় ৭০ কোটি ডলারের কাপড় গেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি। উদ্যোক্তারা চলতি অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে ১০০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগের মাস জানুয়ারিতে রাশিয়ায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি প্রায় ৩২ শতাংশ বেড়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি নিরবচ্ছিন্ন ছিল। কিন্তু জাহাজ চলাচলে ব্যাঘাত ও আন্তর্জাতিক লেনদেনে বিধিনিষেধের কারণে বাকি দিনগুলোতে স্বাভাবিক রপ্তানি সম্ভব হয়নি। ফেব্রুয়ারি শেষে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২৬ শতাংশ। মার্চ মাসে রপ্তানি কমেছে।

বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ উভয়ের মোট ৩৪টি কারখানা রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি করে। রাশিয়ায় রপ্তানি করতেন এমন এক উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাসরি রাশিয়ায় রপ্তানিতে কোনো সমস্যা নেই। তবে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কিছু অংশের সঙ্গে লেনদেন করতে পারছে না রাশিয়া। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার আগে যেসব রপ্তানিকারক এসব ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করেছেন তারা তাদের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। এমনই এক উদ্যোক্তা বলেন, তার কারখানা থেকে সরবরাহকৃত পণ্যের মূল্য আটকে আছে ৫ কোটি ডলার। বিকল্প উপায়ে ক্রেতাদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য আলোচনা চলছে।

ব্যাংকিং লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, যেসব ব্যাংকে বিধিনিষেধ আছে সেগুলো এড়িয়ে গেলে এখন রপ্তানি করতে কোনো সমস্যা নেই। যুদ্ধের প্রথম দিকে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় সরাসরি মস্কোর পরিবর্তে বিকল্প পথে রাশিয়ায় রপ্তানি করা হতো। এখন তার কোনো সমস্যা নেই।

তবে বিকেএমইএর সহ-সভাপতি শামীম ফজলে এহসান বলেন, যুদ্ধের কারণে শুরুতে কিছু সমস্যা হয়েছিল। এতে এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে। শোরুম খোলা থাকলেও ক্রেতা কম। এসব কারণে রাশিয়ায় রপ্তানি কমছে। উপরন্তু, রাশিয়ায় বিকল্প বাজারের অভাব নেই। হাতে পর্যাপ্ত রপ্তানি আদেশ. যে কারণে উদ্যোক্তারা রাশিয়ার প্রতি খুব একটা আগ্রহী নন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *