ভারতের ১২ টাকা দামের পেঁয়াজ বগুড়ায় গেলে ৫০ টাকা।আবারও বাড়ছে দেশি পেঁয়াজের দাম

0

এ অবস্থায় বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। এখন আমদানি শুরু হলেও বাজারে পেঁয়াজের দাম তেমন একটা কমেনি। ভারত থেকে যে দামে আমদানি হচ্ছে তার প্রায় চারগুণ দামে পেঁয়াজ কেনা হচ্ছে। ভারতের বালুরঘাট থেকে ১২ টাকা কেজি দরে আমদানি করা পেঁয়াজ অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া ধরন ভেদে নিম্নমানের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। সোমবার দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর ও বগুড়ার রাজাবাজারে এ চিত্র দেখা গেছে।

ভারতের বালুরঘাটে দেখা গেছে, পেঁয়াজ মূলত ইন্দোর, মহারাষ্ট্র ও নাসিক থেকে আমদানি করা হয়। বাংলাদেশে আনার জন্য বালুরঘাটে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা হয়। সেখানে ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকায়। ভারত থেকে ট্রাক ভাড়ায় প্রতি কেজি ৫ থেকে ৬ টাকা খরচ করে ব্যবসায়ীরা। সেসব পেঁয়াজ বাংলাদেশে এসে জেলা পর্যায়ে বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। সোমবার বাংলাদেশের হিলি পানামা বন্দরে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজি। বগুড়ায় আসার পর এই পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা।

আমদানির অনুমতি নিয়ে দিনাজপুরের হিলি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও সাতক্ষীরার ভোমরা দিয়ে টন পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এসব পেঁয়াজ আমদানি করছেন ৯ ব্যবসায়ী। তিনটি স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি চালান প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৬ সেন্ট দরে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। ডলারের বিনিময় হার ১০৮ টাকা ১৭ পয়সা এবং আমদানি মূল্য দাঁড়ায় ১৫ টাকা স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী। প্রতি কেজি গড় কর সাড়ে তিন টাকা। সে অনুযায়ী শুল্কসহ পেঁয়াজের আমদানি ব্যয় ১৭ থেকে ১৮ টাকা।

বগুড়ার রাজাবাজারের ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ এখনো পুরোদমে বাজারজাত করতে পারেনি। তবে আমদানির কারণে দেশি পেঁয়াজের দাম ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় নেমে এসেছে। এখন যে দামে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন মহাজনরা বেশি দাম নিচ্ছে এবং খুচরা বাজারে দাম ধীরে ধীরে কমছে।

এখন অতিরিক্ত গরমে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বেশি দাম নিচ্ছেন। তবে, সমস্ত খরচ যোগ করে, রিডিং প্রতি কেজি প্রায় 25-26 টাকা হতে পারে। ভোক্তা পর্যায়ে এই পেঁয়াজের দাম যেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকার বেশি না হয়। এখন বাজার মনিটরিং না করলে এ হার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

হিলি বন্দরের স্থানীয় ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেন বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকাররা বন্দর থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ কেনার আগে বেশি দামে নিয়ে যায়। এ কারণে দাম বাড়িয়ে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা; ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সোমবার বগুড়া শহরের রাজাবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। এখানকার খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, তারা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৭১ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। কিন্তু দুদিন আগে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ টাকায়। তারা আরও বলেছে যে বেশিরভাগ ভারতীয় পেঁয়াজ খাওয়ার জন্য অযোগ্য। প্রতিটি ব্যাগে অন্তত তিন-চার কেজি পচা বের হচ্ছে। এ কারণে সাধারণ ক্রেতারা ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে অনীহা দেখাচ্ছেন। ফলে আবারও বাড়ছে দেশি পেঁয়াজের দাম। ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় পেঁয়াজ আসে নাসিক, মহারাষ্ট্র, বোম্বে থেকে। মোট সাত থেকে আট দিন সময় লাগে। তীব্র গরমে এসব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বগুড়া রাজাবাজার আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ জানান, সোমবার দেশি পেঁয়াজ ৬৭ টাকা ৫০ পয়সায় কিনেছেন তারা। এখানে ব্যবসায়ীরা কমিশন পান। সেই দামেই তারা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে। তিনি জানান, হিলি, সোনামসজিদ ও ভোমরা হয়ে গত রোববার থেকে গড়ে তিন থেকে চার ট্রাক পেঁয়াজ বগুড়ার বাজারে এসেছে। বগুড়ায় দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ভারতের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *