গাইবান্ধার কয়েকটি গ্রামে অজানা প্রাণীর হামলা

0

অজানা প্রাণীরআক্রমণে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পথ হারিয়েছেন। দিনরাত লাঠি-পাহারা দিয়েও হামলার হাত থেকে রেহাই নেই। গ্রামবাসীদের দাবি, হামলায় ইতিমধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। তারা অদ্ভুত প্রাণীটিকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

গ্রামবাসীদের বক্তব্য, কাউকে একা দেখলেই হানা দিচ্ছে প্রাণীটি। গায়ের মাংস কামড়াচ্ছে। হিংস্রর থাবায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে মানুষের চোখ-মুখ। এ ধরনের ঘটনায় ওইসব এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে তালুকজামিরা গ্রামে নানার বাড়ি থেকে ফেরার পথে দশ বছর বয়সী রাব্বি হঠাৎ হামলার শিকার হয়। প্রাণীটি রাব্বির বুক ও মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে থাবা দেয়। পরে শিশুটির চিৎকার শুনে মা এগিয়ে এসে তার ওপর হামলা চালায়। অবশেষে, অদ্ভুত চেহারার জন্তুটি আরেক প্রতিবেশীর লাঠি তাড়া করলে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্বজন আব্দুল কাদের জানান, এক মাস আগে ওই গ্রামের কৃষক ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ফেরদৌস সরকার রুকু মাঠে ঘাস কাটতে গেলে হঠাৎ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অদ্ভুত প্রাণীটি। ভয়ঙ্কর প্রাণীটি নাক-মুখে রক্ত ​​নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে ফেরদৌস সরকার রুকু জ্বরে ১৭ দিন পর মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, হরিনাথপুর, তালুকজামিরা, দেওয়ানের বাজার, কেওয়াবাড়ি, কুমেদপুর ও মরা দাতেয়া গ্রামে প্রাণীটিকে দেখা যায়। অনেকটা শিয়াল-কুকুরের মতো, প্রাণীটির একটি বড় মাথা এবং লেজ, ছোট সামনের পা এবং শরীরে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, এখানে একটি নয় একাধিক প্রাণী রয়েছে। দিনে-রাতে শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে এই প্রাণী। গবাদি পশুও বাদ যাচ্ছে না। এলাকার শিশু-কিশোররা ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রায় দেড় মাস ধরে বিভিন্ন দপ্তরে বন্য প্রাণীর আক্রমণের কথা জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. মাসুদার রহমান জানান, বাসস্থান ও খাবারের অভাবে এসব বন্য প্রাণী লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। হয়তো প্রাণীরা জলাতঙ্কে আক্রান্ত হচ্ছে এবং হিংস্র হয়ে উঠছে। সেজন্য তারা মানুষের ওপর হামলা চালাতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মতিন বলেন, পশুর আক্রমণ থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করতে অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *