কক্সবাজারে হোটেলে রোহিঙ্গাদের বিয়ের আয়োজন।পুলিশের অভিযানে বিয়ে পন্ড নারী ও শিশুসহ ৬৩ জন রোহিঙ্গা আটক ।

0

কক্সবাজারের একটি হোটেলে দুই রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা অংশ নেয়। তাদের জন্য মেজবানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি দল রোববার দুপুরে হোটেল-মোটেল জোনের সি পাল-১ ও সি পাল-২ হোটেলে অভিযান চালিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয়। পুলিশ আসার খবরে অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়। এ সময় নারী ও শিশুসহ ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। ১২টি অস্ট্রেলিয়ান এবং ৭টি আমেরিকান পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু পরে এসব পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মো. শাকিল হাসান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা দম্পতির বিয়ের খবর পেয়ে সি পাল হোটেলে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে প্রায় ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৩২ জন নারী ও ২৪ শিশু।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, আটক রোহিঙ্গাদের আরআরআরসির মাধ্যমে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তারা কীভাবে কক্সবাজারে এসেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ওই স্থানে ১৯ জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে ১২ অস্ট্রেলিয়ান এবং ৭ আমেরিকান। তারা সবাই মিয়ানমারের নাগরিক। পরে অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার নাগরিকত্ব পান। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া হোটেল সী পাল কর্তৃপক্ষ কেন রোহিঙ্গাদের স্থান দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ক্যাম্প-১৯ থেকে ফিরোজ আহম্মদ নামে এক রোহিঙ্গা জানান, ৪ নারীসহ মোট ১২ জন রোহিঙ্গা নিয়ে তিনি এখানে এসেছেন। চেকপোস্টে নিরাপত্তাকর্মীদের ফাঁকি দেওয়া হয়।

একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী হাসিনা জানান, তিনি তার পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে কক্সবাজার শহরে এসেছেন। শহরে আসতে তাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি।

মহেশখালী কুতুবজোমের ছাইদুল আমিন ও ইমাম হোসেন নামে দুই ব্যক্তি ১৩ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে এখানে বিয়ের জন্য আসেন। তারা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় তাদের এক ভাই আছে। এক প্রবাসী রোহিঙ্গার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব রয়েছে। এ কারণে তারা বিয়েতে এসেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকেই এখানে বিয়ের রান্না চলছিল। দুপুরে এখানে শত শত মানুষের সমাগম হয়। লোকেরা কানাঘুষা করছিল যে তারা সবাই রোহিঙ্গা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে ছড়িয়ে  পড়ায় এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কৌশলে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। ক্যাম্পে বিজিবি ও এপিবিএনের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। এসব চেকপোস্ট দিয়ে কিভাবে এত রোহিঙ্গা এসেছে তা চিন্তার বিষয়। রোহিঙ্গা ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *