চবি ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙেও থামছে না দ্বন্দ্ব, অস্ত্রের মহড়া

0

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেওয়ার পরও দ্বন্দ্ব থামছে না। টানা সংঘর্ষের জেরে ১১ দিন আগে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় খাবার হোটেলে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে শাটল ট্রেনের বগি ‘বিজয়’ ও ‘সিক্সটি নাইন’-এর দুই সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় সংঘর্ষ শুরু হয়ে এক ঘণ্টা চলে।

উভয় পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় তাদের অনেককে দেশীয় অস্ত্র বহন করতে দেখা গেছে। পুলিশ গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা এ দুই পক্ষের অস্ত্রের মহড়ায় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক বিরাজ করে। তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক রুবেল গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ক্যাম্পাসে এখন ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। খাবার টেবিলে বসেই এ ঘটনা ঘটে। আমাদের কাছে এখন স্পষ্ট, অনেকেই তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ক্যাম্পাসে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে, যার শিকার হতে হয়েছে ছাত্রলীগকে।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার বলেন, আমরা পরিস্থিতি শান্ত করেছি। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ সংঘর্ষে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, গতকাল ক্যাম্পাসের একটি হোটেলে খাবার খেয়ে টেবিল থেকে বের হওয়ার সময় সিক্সটি নাইন কর্মী মোহাম্মদ আজমীরের হাত টেবিলে থাকা ডালের বাটিতে আঘাত করে পড়ে যায়। এ বিষয়ে বিজয়ের দলীয় নেতাকর্মীরা মো. আজমির কথা হয় মাহির চৌধুরীর সঙ্গে।

এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ‘সিক্সটি নাইন’-এর কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে এবং ‘বিজয়’ পক্ষের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের কোণে অবস্থান নেন। দুই গ্রুপের মধ্যে ইটপাটকেল ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের সময় সিক্সটি নাইন-এর নেতাকর্মীরা শাহজালাল হল থেকে লাঠিসোঁটা, রামদা, রড ও ইট-পাটকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। আর বিজয়ের কর্মীরা একই ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হল থেকে বেরিয়ে আসে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ থেকে ২১ জন আহত হয়েছে বলে চবি মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান। তিনি বলেন, আমরা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পাঠিয়েছি। তাদের কারও অবস্থা গুরুতর নয়।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন দলের নেতা সাইদুল ইসলাম সাইদ বলেন, প্রতিপক্ষের প্ররোচনায় ঘটনাটি সোহরাওয়ার্দী হলের ক্যান্টিনের সামনে সংঘর্ষে রূপ নেয়।

বিজয় দলের নেতা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঝামেলা না বাড়াতে বলেছি। কিন্তু প্রতিপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে আসে। পরে আমাদের হলের সবাই প্রতিরোধ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *