নির্বাচনকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।খসড়া ইউপিআর নিয়ে আলোচনা

0

নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সুশীল সমাজের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব নেই। নির্বাচনের সময় যে সরকারই থাকুক না কেন তাদের ভূমিকা নিরপেক্ষ রাখতে চায়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমান সংবিধানের মধ্যেই সবাইকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। খসড়া ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) অংশগ্রহণকারীদের আলোচনায় এই বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘খসড়া ইউপিআর স্টেকহোল্ডারস রিপোর্ট’ শীর্ষক জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ড. শাহরিয়ার আলম। এ ছাড়া জাতিসংঘ ঢাকা কার্যালয়ের মানবাধিকার বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হুমা খান, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি রঞ্জন কর্মকারসহ বিভিন্ন সংস্থার মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তামান্না হক। সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা নিরপেক্ষ হতে হবে। একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে যাতে সকল প্রতিযোগী, অংশগ্রহণকারী এবং অংশীদারদের জন্য একটি সমান খেলার ক্ষেত্র থাকে। নির্বাচনী সরকারের ভূমিকা এমন হওয়া উচিত যাতে সবার সমান অধিকার থাকে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোনো অবস্থাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরবে না। বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যা বর্তমান সরকার বা আওয়ামী লীগকে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করবে। বর্তমান আইনের মধ্যেই সবাইকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র অব্যাহত রাখার জন্য যে বিষয়গুলো প্রয়োজন তার মধ্যে প্রধান হলো ভোট। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এলে প্রধান বিরোধী দল এতে অংশ নিতে চায় না বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।

২০১৪ সালের নির্বাচনের বাস্তবতা সবাই জানে। তাদের (বিএনপি) প্রধান শরিকরা ২০১৪ সালে অংশ নিতে চায়নি। নির্বাচনের সংখ্যা আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে ২ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পরিস্থিতি বদলে দেয়। বিশ্লেষণ করে দেখলাম, ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৯০টি আসনে গড়ে ২ থেকে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। কারো সঙ্গে জোট করলে হিসাব পাল্টে যেত।

শাহরিয়ার আলম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দায়িত্ব যেমন সরকারের রয়েছে, তেমনি অন্যদেরও দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব পালনে আমরা কাউকে বাধ্য করতে পারি না। এ অবস্থার উন্নতির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা সাংবাদিকদের দমন করার জন্য করা হয়নি। কিন্তু কেউ কেউ অতিউৎসাহী এবং এর কিছু অপব্যবহার করেছে। প্রয়োজনে এ আইন সংশোধন করা হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী।

মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, মানবাধিকারের বিষয়টি গভীরভাবে বুঝতে হবে। বলপূর্বক গুম এবং বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো খারিজ না করে সমাধান করা দরকার। একটি স্বাধীন কমিশন করা যেতে পারে। কোন বাধা থাকা উচিত নয়.

উপস্থাপনায় ইউপিআরে আগের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। তবে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ৭৯১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আর একই সময়ে নিখোঁজ হয়েছেন ৫৬ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *