ঘাটাইলে আ.লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আড়াই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ

0

ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শটগান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

নবগঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল আওয়ামী লীগ গত দুই দিন ধরে উত্তপ্ত। এ কারণে সোমবার বিকেলে একই স্থানে আওয়ামী লীগের উভয় পক্ষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এদের একজনের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু এবং অন্যটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীরা। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থান নেয় উভয় পক্ষ। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩১ রাউন্ড শর্টগানের শেল ও ছয়টি গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মতিউর রহমান মারা গেলে ২০১২ সালে এ আসনে উপনির্বাচন হয়। সে সময় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন রানা। এরপর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত।

২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান রানা। তিনি আবারও জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হন। রানার বাবা আতাউর রহমান খান টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার আসামি হয়ে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান। বর্তমানে তিনি সংসদ সদস্য। এদিকে বিশ বছর পর কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে গত বছরের ৬ জুন ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লেবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মিয়ার নাম ঘোষণা করেন নেতৃবৃন্দ। পরে সবাইকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে বলে জানানো হয়। তবে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে কোনো সংসদ সদস্যকে নিয়োগ না দেওয়ার অভিযোগে রোববার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ করে এবং সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। রোববারের কর্মসূচির ভিত্তিতে সোমবার বিকেল ৩টায় দলীয় কার্যালয় থেকে কলেজ মোড় চত্বরে ছাত্রলীগ নেতা আবিদের বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে লেবু। একই দিনে একই স্থানে বিক্ষোভ করেন রানার অনুসারীরা। বিকেল ৫টার দিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এ সময় সড়কের দুই পাশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম লেবু জানান, তারা শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা শুরু করেছেন। রানার অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মিছিলে হামলা চালায়। এতে তার চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটিতে পদচ্যুত নেতাদের সমন্বয়ক আনেলা ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার মোঃ শাহজাহান জানান, অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড, স্বাধীনতা বিরোধী ও জামায়াত-বিএনপির সমন্বয়ে গঠিত পকেট কমিটি বিলুপ্ত করার দাবিতে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কমিটি বিলুপ্ত না হলে সর্বত্র লেবুর গং দেওয়া হবে। সংঘর্ষে তাদের সাত নেতা আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, “পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩১ রাউন্ড শর্টগানের শর্টগান ও ছয়টি গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। অতিরিক্ত ৫০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে পরিবেশ স্বাভাবিক হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। স্বাভাবিক হয়েছে। রাস্তা শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *