মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ড্রেনে ফেলে দিয়েছেন বাবা-মা, পুলিশ বলছে

0
Untitled design - 2025-06-19T160401.627

একের পর এক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবা তার একমাত্র মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করে বস্তায় ভরে ড্রেনে ফেলে দিয়েছেন। এই ঘটনায় বাবাকে সহায়তা করেছেন মা।

Description of image

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পোশাক শ্রমিক জনির হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন নিহত জনির বাবা করুণা সরকার ও মা অসিতা রানী সরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম এই তথ্য জানান।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‘কে’ সার্কেল) হাসিনুজ্জামান সমাবেশে বলেন, করুণা সরকার তার স্ত্রী অসিতা রানী সরকার, একমাত্র ছেলে জনী সরকার এবং দুই মেয়েকে নিয়ে ফতুল্লার লাল খা শিহাচর এলাকার দুলাল থানার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। স্থানীয় মাদকাসক্ত ও বখাটেদের সাথে মেলামেশার পর তার ছেলে জনি সরকার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকের টাকার জন্য জনি প্রায়শই তার বাবা-মাকে মারধর করত এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। তার বাবা করুণা সরকার এবং মা অসিতা রানী সরকার তাদের মাদকাসক্ত ছেলের ক্রমবর্ধমান নির্যাতন ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন।

জেলা পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ১৬ জুন রাতে জনি মাদকের টাকার জন্য তার বাবা-মা এবং মাকেও মারধর করত। এরপর রাতে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়লে তার বাবা করুণা সরকার রুটি তৈরির বেলুন দিয়ে জনির মাথায় ও মুখে আঘাত করে। এক পর্যায়ে জনির ঘুমন্ত দেহ অজ্ঞান হয়ে গেলে, তার মায়ের সহায়তায় করুণা সরকার তার হাত-পা বেঁধে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে রাতে রাস্তার পাশের একটি ড্রেনে ফেলে দেন এবং বাড়ি ফিরে আসেন। পরের দিন, ১৭ জুন সকালে ফতুল্লা পুলিশ ড্রেন থেকে জনির লাশ ব্যাগে করে উদ্ধার করে।

নিহত জনির বাবা করুণা সরকার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার তদন্ত এবং সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণে হত্যার এই চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচিত হয়।

পরবর্তীতে, বুধবার (১৮ জুন) রাতে পুলিশ এই মামলায় নিহত জনির বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করলে, তারা তাদের দুই ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত বিবরণ দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন এবং উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীমও উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।